বেআইনি বোমার কারখানা হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে খোঁচা রাজ্যপালের
ফের একবার রাজ্য সরকারকে খোঁচা, বেআইনি বোমার কারখানা হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ মন্তব্য রাজ্যপালের
সঞ্জয় সাহা
রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এবার গুরুতর অভিযোগ তুললেন রাজ্যপালের জগদীপ ধনখড়। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি টুইট করে তিনি বলেন যে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বর্তমানে বোমা তৈরীর কারখানায় পরিণত হচ্ছে। শনিবার এরাজ্যের মুর্শিদাবাদ ও কেরেলা এর্নাকুলামের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এন আই এ ৯ জন আল-কায়েদা জঙ্গীকে গ্রেফতার করে। আর এদের মধ্যে ছয়জনই এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। আর এই ঘটনার সূত্র ধরেই টুইট করে রাজ্যের গণতন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এদিন তার টুইটে লেখেন, বেআইনি বোমা তৈরীর কারখানা হয়ে উঠেছে রাজ্যে। এতে গণতন্ত্র বিপন্ন হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে রুখতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যারা পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পদে রয়েছেন তারা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার এই ধরনের পরিস্থিতির দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।
এরপরেই রাজ্যপাল রাজ্য পুলিশের ডিজিপি বীরেন্দ্র কে উদ্দেশ্য করে টুইটে লেখেন যে, রাজ্যের বাস্তব পরিস্থিতির থেকে অনেক দূরে রয়েছেন ডিজিপি এবং এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি রাজ্য পুলিশের ভূমিকা কে প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করলেও, তাদের রাজনৈতিক ভাবে নির্দেশিত হয়ে কাজ করার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
প্রসঙ্গত ধনখড়ের রাজ্যপাল পদে নিযুক্ত হওয়ার সময় থেকেই রাজ্য সরকারের সাথে নানা বিষয়ে তার মত বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের এবং সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এর ফলে তাকে সমালোচিত হতে হয়েছে শাসকদলের তরফ থেকে। কিন্তু এদিন রাজ্যকে বেআইনি বোমা তৈরীর কারখানা বলে উল্লেখ করে তিনি কার্যত রাজ্যের পুলিশ তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অর্থাৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মদক্ষতার ওপরেই বিরাট বড় প্রশ্ন চিহ্ন তুলে ধরেছেন। যদিও রাজ্যপালের টুইট প্রসঙ্গে এদিন মন্তব্য করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
সৌগত রায়ের দাবি, বেশিরভাগ জঙ্গী দেশের সীমান্ত হয়েই পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে। আর সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের নয়, বিএসএফের- যা সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই রাজ্য কে দোষারোপ না করে বরং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেই রাজ্যপালের এ বিষয়ে আগে জবাবদিহি চাওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ইতিপূর্বে খাগড়াগড় বোমা বিস্ফোরণ কান্ডেও জঙ্গী যোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে আজকের ঘটনায় এখনো অবধি জানা গিয়েছে যে, মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত জঙ্গিদের নাম হল, নাজমুস সাকিব, আবু সুফিয়ান, মইনুল মন্ডল, লিউ ইয়েন আহমেদ, আল মামুন কামাল এবং আতিতুর রহমান। অন্যদিকে কেরালায় আই এন এর জালে ধরা ধরা পড়া জঙ্গিরা হলেন, মোশারফ হোসেন, ইয়াকুব বিশ্বাস এবং মুর্শিদ হাসান। ধৃতদেরকে কেরালা এবং পশ্চিমবঙ্গের আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। আর গোটা বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এ রাজ্যের রাজনীতি।